
নূরুল ইসলাম আনজু ঃ এ কে আজাদ আওয়ামী লীগ করেন তা সর্বজন স্বীকৃত, নতুন করে প্রমাণ করার
কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম
সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফ।
তিনি বলেন, এ কে আজাদ দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় ২০২৪ এর অবৈধ নির্বাচনে
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন। তার নির্বাচনী প্রচারণায়
তখনও আওয়ামী লীগের একটা গ্রুপ ছিল। এখনও তিনি আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী
বাহিনী নিয়েই প্রচারণা চালাচ্ছেন। এটা নতুন করে প্রমাণ করার কিছু নেই।
মঙ্গলবার (২১অক্টোবর) দুপুরে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ
সম্মেলনে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব একে কিবরিয়া স্বপনের সঞ্চালনায় লিখিত
বক্তব্য পাঠ করেন জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ
সম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফ।
নায়াব ইউসুফ আরও বলেন, তিনি (এ কে আজাদ) বলেন যে, তিনি আওয়ামী লীগ
করেন নাই। স্বৈরাচার সরকারের ডাকা প্রেস কনফারেন্সে দেওয়া তার সেই বক্তব্য
এখনও মুছে যায়নি। এখনও সোশ্যাল মিডিয়ায় তার সেই বক্তব্য ঘুরে বেড়াচ্ছে…
‘শুরুতে আমি তোমাকে চাই, শেষ পর্যন্ত আমি তোমাকে চাই জয় বাংলা জয়
বঙ্গবন্ধু’! তার দেওয়া সেই বক্তব্য তিনি নিজে ভুলে গেলেও দেশের মানুষ ভোলেনি।
তিনি বলেন, ‘মজার বিষয় হলো সোমবার (২০ অক্টোবর) তিনি (এ কে আজাদ)
যাদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যা প্রতিবাদ জানিয়েছেন সেখানেও তার
ঠিক পেছনেই দাঁড়ানো ব্যক্তি বাখুন্ডার যুবলীগের ‘দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী’ রিয়াদ।
তার চারপাশে থাকা প্রতিটি ব্যক্তি আওয়ামী লীগ, যুবলীগ এবং ছাত্রলীগের
ক্যাডার—সন্ত্রাসী, যারা জুলাই গণ—অভ্যুত্থানের সময় সাধারণ ছাত্র—জনতার ওপর
নির্বিচারে হামলা চালিয়েছিল। কোনো এক অজানা কারণে আইন—শৃঙ্খলা
বাহিনী এখনো তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। এটা খুবই
দুঃখজনক ব্যাপার।
মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, এ কে আজাদ বিএনপি তথা আমার
নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এনেছেন তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন,
বানোয়াট এবং রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা মাত্র।
নায়াব ইউসুফ বলেন, আমি আবারও বলছি তিনি (এ কে আজাদ) ব্যক্তিগত
প্রচারণার আড়ালে স্বৈরাচারের সন্ত্রাসীদের একত্রিত করছেন, তাদের উজ্জীবিত করে
সন্ত্রাসী কার্যক্রমে মদদ দিচ্ছেন। এসব কিছুর মূলে একটাই উদ্দেশ্য তা হলো
পতিত স্বৈরাচারকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা। কিন্তু দেশবাসী তা কোনোদিন হতে
দেবে না। যেকোনো কিছুর বিনিময়ে এ সন্ত্রাসীদের রুখে দেবে। এই দেশে
কোনো স্বৈরাচারের স্থান নেই।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, গত ১৯ অক্টোবর কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের পরমানন্দপুর
বাজারে পূর্ব ঘোষিত ৩১ দফার প্রচার পত্র বিতরণের সময় সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ
ঘোষিত সংগঠন আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা একে আজাদ এর সফর সঙ্গী হিসেবে
উপস্থিত হন।
নিষিদ্ধ ঘোষিত যুবলীগ, ছাত্রলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা সেখানে উপস্থিত হয়ে
আপত্তিকর ভাষা ও স্লোগান দিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের উপর চড়াও হওয়ায় স্থানীয়
জনগণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে উপস্থিত জনতা তাদের বিরুদ্ধে
প্রতিরোধ গড়ে তুলে, এক পর্যায়ে উৎসুক জনগণ তাদেরকে ঘটনাস্থলে অবরুদ্ধ
করার চেষ্টা করে। সে সময় সেখানে থাকা বিএনপি নেতাকর্মী ও প্রশাসনের
সাহায্যে একে আজাদ সহ তাহার সফরসঙ্গীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সময় একটি
বালক ছেলে যে আমাদের দলের কেহ না, সে গেন্ডারী আখ দিয়ে গাড়ীতে একটি
হালকা আঘাত করে এবং সঙ্গে সঙ্গে আমাদের নেতাকর্মীরা তাকে নিবৃত করে
আক্রান্ত গাড়ীটি কে সেই স্থান ত্যাগ করার সুযোগ করে দেয়।
তিনি বলেন একে আজাদ আমাকে দোষারোপ করে তার নিজেস্ব টিভি চ্যানেল ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে আমার নামে মিথ্যা অপপ্রচার করে সাধারণ জনগণকে
বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। এটি তার নিছক একটি নির্বাচনী অপকৌশল বলে মনে
করি।
এ সমস্ত মিথ্যা ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যে প্রনোদিত কথা বলে জনগণের মধ্যে আমার
ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইতিপূর্বে তিনি তার নিজস্ব
গণমাধ্যমকে ব্যবহার করে এবং প্রশাসনের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে মিথ্যা
মামলা দেয়ার চেষ্টা করেছেএবং আমাদের দলের নেতাকর্মীদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার
চেষ্টা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে মহানগর বিএনপির আহবায়ক এ এফ এম কাইয়ুম জঙ্গি,জেলা
বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি রশিদুল
ইসলাম লিটন, জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক যথাক্রমে আফজাল হোসেন খান
পলাশ, জুলফিকার হোসেন জুয়েল, আতাউর রশিদ বাচ্চু, আজম খান , তানভীর
চৌধুরী রুবেল, অ্যাডভোকেট আলী আশরাফ নান্নু, দেলোয়ার হোসেন দিলা,
সদস্য মোস্তাক হোসেন বাবলু, মহানগর বিএনপির যুগ্ন—আহবায়ক এবি
সিদ্দিকী মিতুল, সদস্য সচিব গোলাম মোস্তফা মিরাজ,কোতোয়াল বিএনপি সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাজমুল চৌধুরী রঞ্জন, সাবেক সদর উপজেলা
ভাইস চেয়ারম্যান বেনজির আহমেদ তাবরিজসহ বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের
নেতৃবৃন্দ ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সদস্যবৃন্দ এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক
মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।###
নূরুল ইসলাম আনজু
ফরিদপুর প্রতিনিধি:
২১.১০.২৫ ইং
মন্তব্য করুন